অঙ্গ সংযোজনে সব পরীক্ষা এখন দেশেই

প্রকাশ: July 5, 2015
BSMMU

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো কিডনিসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংযোজনপরবর্তী প্রয়োজনীয় রক্ত পরীক্ষার সুবিধা চালু হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবরেটরিতে ‘প্যানেল রিঅ্যাকটিভ অ্যান্টিবডি (পিআরএ)’ নামের এই পরীক্ষা করা যাবে।

যে কোনো অঙ্গ সংযোজনের পর রক্তে তৈরি হওয়া ‘পিআরএ’ মাত্রা নির্ধারণে এই পরীক্ষার প্রয়োজন হয়। রক্তে নির্ধারিত মাত্রার বেশি পিআরএ তৈরি হলে শরীরের সঙ্গে সংযোজিত অঙ্গ খাপ না খাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়। তখন চিকিৎসকদের নিয়মিত বিরতিতে রক্ত পরীক্ষা করতে হয়।

বিএসএমএমইউয়ের চিকিৎসকরা বলেন, বাংলাদেশে কিডনি সংযোজন সবচেয়ে বেশি হয়, যার জন্য প্রয়োজনীয় পিআরএ পরীক্ষার এই সুযোগ প্রথমবারের মতো একমাত্র এই বিশ্ববিদ্যালয়েই চালু হলো।

শনিবার বিএসএমএমইউয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল হাসান খান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজি বিভাগের ‘এইচএলএ টিস্যু টাইপিং’ ল্যাবরেটরিতে এই পরীক্ষা সুবিধার উদ্বোধন করেন।

অঙ্গ সংযোজনের আগে দাতা ও গ্রহীতার মধ্যে টিস্যুর সামঞ্জস্যতা নির্ধারণের পরীক্ষাতেও পিআরএ টেস্ট ব্যবহার করা হবে।

এখন দেশে বিদ্যমান ‘টিস্যু টাইপিং’ পদ্ধতির মাধ্যমে চিকিৎসকরা এই পরীক্ষা করে থাকেন। কিন্তু সংযোজনপরবর্তী পিআরএ টেস্টের জন্য রক্তের নমুনা বাইরে পাঠাতো হতো।

ভাইরলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শাহিনা তাবাস্সুম বলেন, “এভাবে পরীক্ষার জন্য রক্তের নমুনা বাইরে পাঠানোর বিষয়টি ব্যয়বহুল ও সমসয়সাপেক্ষ। এখন এই সুবিধা আমাদের হাতে আসায় দেশেই এই পরীক্ষা করা যাবে। নতুন এই সুবিধা যোগ হওয়ায় এখন অঙ্গ সংযোজনের জন্য প্রয়োজনীয় সব বিশেষায়িত পরীক্ষা এই বিশ্ববিদ্যালয়েই করা যাবে।”

এই পরীক্ষার জন্য বিদেশ থেকে বিশেষজ্ঞদের এনে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আফজালুন নেছা বলেন, বাংলাদেশে মৃতদেহের অঙ্গ সংযোজন চালু হলে নতুন পিআরএ টেস্ট সেখানেও সামঞ্জস্যতা নির্ধারণে ব্যবহার করা যাবে।

মানসম্পন্ন বড় টিস্যু

বাংলাদেশে ব্যক্তি খাতে মাশরুমিং শুরু হওয়ার পর দেশে রোগ নির্ধারণ সুবিধা ব্যাপকভাবে বেড়েছে।

এই চাহিদা মেটাতে সরকারি হাসপাতালগুলোতেও উন্নত রোগ নির্ধারণ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ চিকিৎসা শিক্ষা ও গবেষণায় বিএসএমএমইউয়ের কোনো বিকল্প নেই।

এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইরলজিস্ট অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, “কিন্তু আমাদের অবশ্যই মান নিশ্চিত করতে হবে। মান সব সময়ই বড় বিষয়।”

১৯৮০’র দশকে দেশে নিজের ল্যাবে প্রথম এইচআইভির নমুনা পরীক্ষায় সফল হন তিনি।

তিনি বলেন, সিঙ্গাপুর ও ভারতে তার কাজের অভিজ্ঞতা দিয়ে বিচার করলে বিএসএমএমইউতে তার ল্যাবে পরীক্ষার সঙ্গে তুলনা করলে মানের ক্ষেত্রে বড় ধরনের তফাৎ দেখেন না।

মান নিশ্চিতে রোগ নির্ধারণী পরীক্ষাগারের সত্যায়নের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, “কিন্তু মান নিশ্চিতের এই প্রক্রিয়ায় আমরা নেই।”

উপাচার্য কামরুল হাসান বলেন, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্সটিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাস্যুরেন্স সেল (আইকিউএসি) স্থাপন করা হয়েছে।

সূত্র: বাংলা বিডিনিউজ ২৪ ডট কম

You must be logged in to post a comment Login

মন্তব্য করুন