বেহাল সড়ক : নাগরিক মত

নাগরিক অ্যাকটিভিজম প্ল্যাটফর্ম ‘আমরা ঢাকা’র উদ্যোগে ঢাকার নাগরিকদের কাছে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, ঢাকার রাজপথের চিত্র নিয়ে। রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থার অভিজ্ঞতা জানতে চাওয়া হয়েছিল। তাদের ছবি, অডিও, ভিডিও বা অন্য ডকুমেন্ট থাকলে, তাও শেয়ার করতে অনুরোধ করেছিল আমরা ঢাকা। স্বতস্ফুর্তভাবে অনেকে আমাদের জানিয়েছেন তাদের সমস্যার কথা, রাস্তাঘাটের অবস্থা উন্নয়নে মতামত বা পরামর্শ অভিজ্ঞতার কথা। মেইল, ফেইসবুক মেসেজে, বিভিন্ন পোস্টের কমেন্টে নাগরিকদের মতামত এখানে প্রকাশ করা হল।
শোয়েব ঢালি জানিয়েছেন, নিউমার্কেট এলিফ্যান্ট রোডে মানুষ মেন রোড দি এ হাঁটে ফুটপাত হকারদের দখলে।
মুন্না জানান ঢাকার মিরপুর ১৪ সরকার বাড়ির পাশের রাস্তার কথা। প্রতিদিন হাজার মানুষ এপথে চলাচল করে। মেয়র নির্বাচনের আগে প্রার্থীরা এই রাস্তায় ভোট চাইতেও এসেছিল। কিন্তু কাদায় এই রাস্তা ভরাট হয়ে আছে।
মনির হোসেন জানান, মিরপুর ২ নম্বরের থানা সংলগ্ন কাঁচা বাজারের সাথে রাস্তা বেস চওড়া, কিন্তু ১/৩ ভাগ রাস্তা ব্যাবহার করছে বিভিন্ন দোকান পাট। এবং মিরপুর ১০ ন; কোন ফুটপাত নাই নাগরিকদের চলাচলের জন্য।
আজিজুর রহমান সুমন জানান, ধানমন্ডি ২৭এর রাপা প্লাজা থেকে ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালে যাবার পথ পুরোটাই অবৈধ পার্কিং এর গ্রাসে। তিনি ছবি তুলে পাঠিয়েছেন এই পথের।
মাসুম বিল্লাহ বলেন, ৫ বছর ধরে উত্তরা পূর্ব থানার ডাম্পিং এরিয়া হিসাবেও এই শাহজালাল এভিনিউ ব্যবহার হয়ে আসছে। তার ওপর ১০০ ফুটের এই এভিনিউ টি চা-সিগারেট, ফলের ও অন্যান্য অবৈধ দোকানে সয়লাব। সাথে অবৈধ বাস ও ব্যাটারী রিক্সার ষ্ট্যান্ড । ফলে সাধারণ মানুষের একটু হাঁটা-চলার জায়গা ছিলো না এতদিন। অথচ ২ সেক্টরের মাঝে শাহজালাল এভিনিউ যা কিনা সেক্টর-৪ এবং সেক্টর-৬ এর মধ্য দিয়ে অতিবাহিত। এস টি এস স্কুল, স্কলাস্টিকা জুনিয়র সেকসন সহ অন্তত: ২০ টি স্কুল এসব সেক্টরের মধ্যে। এই রাস্তা উত্তরখান হয়ে কাচকুড়া গিয়ে মিশেছে। এতই অবহেলিত যে ৩ দিন আগেও বিঘাত পানি জমে থাকতে দেখা গেছে। আর সেই একই এভিনউ সদ্য সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের মেয়র আনিসুল হকের আগমন উপলক্ষে সেই পানির ভেতরে গরম পিচ দিয়ে রোলার দিয়ে আজকের জন্য তড়িঘড়ি করে সুন্দর করা হলো। অবৈধ দোকান ওঠানো হলো ।বলা হলো মাত্র ২ টা দিন আপেক্ষা করতে। ড্রেন যা ৩ বছরও পরিষ্কার করেনি তা পারিষ্কার করা হলো। এসবের মানে ৩ দিন পর আবার যা ছিল সেই রুপ ফিরে পাবে শাহ জালাল এভিনউ! এত তোড়-জোড় করে যা কিছু হচ্ছে তাতে মানুষ কি তার নাগরিক সেবা পায়? কি পেল উত্তরাবাসী ! সবই মেয়রকে খুশি করার জন্য- সাধারণ মানুষ সব সময় অবহেলিত।
ইফতেখার দিপ্ত বলেন, “ ১২ নং ওয়ার্ড আহম্মেদ নগর পাইকপাড়া মিরপুর ১ ঢাকা ১২১৬। আমার যোগাযোগ নাম্বার 017425084XX. আমাদের এলাকার রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ একটু বৃষ্টি তেই পানি জমে একাকার। আমাদের এখানে একটি খেলার মাঠ ছিল তাও রাস্তা কেটে তার মাটি দিয়ে ভরাট করে ফেলা হয়েছে আপাতত আমার এলাকার এটুকু উন্নয়ন প্রয়োজন।“
রাইসুল বাদল জানান তার বাসার ঠিকানা, ১২ পরিবাগ। ময়লার ভাগাড়টা যদি সরানো যেত ভাল হত। মেইন রাস্তয়ে বাসার সামনে ওপেন জায়গাতে ময়লাগুলো ভাগ করা হয়।
রফিকুল ইসলাম খান জানান, এক ঘন্টা বৃষ্টিতেই উত্তরা সেক্টর ৪ এর ৫ নম্বর রোড অব্যবহারযোগ্য হয়ে পরে। তার কারন দূর্বল ড্রেনেজ ব্যবস্থা।
মির্জা মেহেদী হাসান ঢাকা উত্তরের মেয়রকে উদ্দেশ্য করে জানান, মিরপুর ১০ নম্বরের সেকশন বি, রোড নম্বর ২২/২ তে তার কর্মস্থল। এই রাস্তাটি ছাড়া আসেপাশের সব রাস্তাই ঠিকঠাক আছে, কিন্তু এই সড়কটি একেবারেই ভাঙাচোড়া। খানা-খন্দের জন্যে এমনকি রিকশাও চলাচল করতে পারে না এপথে। তিনি এর আশু প্রতিকার ছান।
হান্নান তালুকদার ঢাকা উত্তরের নবনির্বাচিত মেয়রের উদ্দেশে বলেন, আনিস ভাই আমাদের ভাসানটেক থানা বলতে গেলে আপনার নিজের এলাকা ।ভাসানটেক থানায় রাস্তার অবস্থা খুব খারাপ । ভাসানটেক মোর থেকে কেনটনমেনট রাস্তাটা একবারে খারাপ যা চলাচল করার মত উপযোগী না।আবার ভাসানটেক মোর থেকে দেওয়ান পাড়া রাস্তা টা আরো খারাপ ।ভাসানটেক সরকারি কলেজ এর বি আর পি বিতর দিয়ে যাওয়ার জন্য বিসটির সময় যাওয়া যাচ্ছে না ছাত্র এবং টিচার দের ছাড়া ও সাধারণ জনগণের চলাচল করাতে অসুবিধা হচ্ছে ।
নাজিবোদৌলা মতিন জানান, রামপুরা ব্রিজ থেকে শুরু করে বিশ্বরোড পর্যন্ত অনেক যায়গায় রাস্তা বন্ধ করে ময়লা ফেলা হয় , এটা বন্ধ করুন ।
তানভির রেজা বলেন, মোহাম্মদপুর জাকির হোসেন রোডে দ্রেন আছে, কিন্তু এসব ড্রেনের মুখগুলো বন্ধ। এসব ড্রেন খুলে দিলে পানি চলে যাবে। আন্ডারগ্রাউন পিট এরোপর ৪ নম্বর ম্যান হোল ছিল। আগে দেগুলো দিয়েই পানি চলে যেত। রাস্তা কার্পেটিং করার ফলে সেগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে এই বন্ধ ম্যান হোলগুলো আবার খুলে দেয়া হলেই পানি আর আটকে থাকবে না।
তিনি আরো বলেন, মোহাম্মদপুর বিআরটিসি বাসডিপোর সামনে বাম দিকের প্রথম মোড়ে ডেসার একটি ১১ হাজার কিলোভোল্টের পোল আছে। যেটি প্রায় রাস্তার এক তৃতীয়াংশ মাঝখানে। এই অংশে ট্রাফিক জ্যাম হয় এই পোলটির জন্যে। সেইসাথে এখানে বাসগুলো যাত্রী ওঠায়।
মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক বলেন, বনানী সুপার মার্কেট, কাচা বাজার বা এর আশেপাশের ( সিটি করর্পোরেশন অফিস এর রাস্তাও) রাস্তাগুলো নষ্ট হয়ে গেছে এগুলো মেরামত করা প্রয়োজন। কাজগুলো বেশী বড় নয়। এ সকল কাজ দ্রুত করলে মানুষ খুশি হবে। আশা করি এগুলো মেয়রের নজর ও বিবেচনায় আসবে।
শ্রাবন ইয়াসমিন বলেন, নদ্দা থেকে বারিধারা ডিওএইচ এস পর্যন্ত রাস্তার খুব খারাপ অবস্থা। এতে যারা এইপথে যায় তাদের অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
সাইমন মণ্ডল বলেন, মিরপুর-৭ নাম্বারের মিল্ক ভিটা রোডের অবস্তা খুবই শোচনীয়। এখানে সুয়ারেজ লাইনের নামে রাস্তা কেটে ফেলেছে। এখন রাস্তা বলতে কিছু নাই রাস্তার পিচের অংশ বা চামড়া বলতে কিছু নাই। যে কারনে, বৃষ্টি হলেই হাঁটু সমান কাঁদা এবং বৃষ্টির পরে গার্মেন্টস এর মেয়ে ছেলেদের হাঁটাহাঁটিতে মাজা সমান কাঁদা হয়ে যায়। মল্লিকা হাউজিং এর রাস্তাটির কাজ শুরু করলে ছোট রাস্তাটি এক রাতেই ঠিক করা সম্ভব।
রাফি শাফায়েত জানান, আগারগাঁও গভমেন্ট কলোনির পাশে যে পিডিবির অফিস বানানো হচ্ছে সেই রাস্তার পাশে একটি বিশাল আকারের গর্ত।সেটি যেকোন সময় দুর্ধটান ঘটাতে পারে।
সালেহিন রাজ বলেন, দয়ে করে এয়ার গারবেজ সিস্টেম বন্ধ করেন। এটি আমাদের জীবন অসহনীয় করে তুলছে।
সরোয়ার খান রাজপথের বেহাল অবস্থার ছবি তুলে আনেনঃ
সাজেদা সুমি বলেন, মধ্যবাড্ডা পোষ্ট অফিস রোডে আসুন একবার ..স্বচক্ষে দেখে যান এখানকার রাস্তা ঘাটের অবস্থা কি আর মানুষ কিভাবে এই জলাবদ্ধ রাস্তায় চলাচল করছে।
একই অনুরোধ জানিয়েছেন মিজানুর রহমান ও কামরুল হাসান ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এলাকার মানিকদি বাজার এলাকার রাস্তা সম্পর্কে।
গাংচিল পাখি ছদ্মমানে একজন বলেন উততরার আজমপুর থেকে উত্তরখান মাজার রোড পর্যন্ত আমরা কি কখনোই পিচঢালা পথ দেখতে পাব না?
ইঞ্জিনিয়ার এ জামান বলেন, নর্দা কালাচাদপুর ব্রিজের পাশেই এবং তার আশেপাশে-ই অনেক দোকান রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। সেইসব দোকানগুলো কি ওঠানো যায় না? তাহলে এলাকাবাসী অনেকটা শান্তি পেতো। আর নর্দা হতে DOHS Gate পর্যন্ত রাস্তার হাল আরো বেশী খারাপ। গ্রামের মাটির রাস্তার মতো হয়ে গেছে। আপনার সদয় দৃষ্টি কামনা করছি।
ফেরদাউস খান জানান, উত্তরা ৮ নং সেক্টর পুরোটাই বিভিন্ন সরকারি বিভাগের কোয়ার্টার । আমি থাকি সোনালী ব্যাংক অফিসারস কোয়ার্টার এ। আমাদের কোয়ার্টারের সামনের রাস্তা টা বিগত ২ বছর যাবত এতটাই খারাপ ছিল যে, বাচ্চাদের স্কুলে যাওয়া কিছু দিন বন্ধ ছিল। সম্প্রতি এই রাস্তা টা যেনতেন ভাবে মেরামত করা হচ্ছে কিন্তু এর দুইপাশে ওয়াক ওয়ে বা ফুটপাত করা হচ্ছে না । আমদের আশংকা এর ফলে এই রাস্তার উভয় পাশে আবার আগের মতো বস্তি স্থাপন করা হবে এবং এর ফলে পানি নিস্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে সহসাই আবার অবস্থা পূর্ববৎ হয়ে যাবে।
গিয়াস বাপ্পি বলেন, এই ছবি গুলো মিরপুর ১ মাজার রোড, রাস্তা প্রায় এক পাশ বন্দ করে ফুটপাত এ ব্যবসা করে,তাতে করে রাস্তায় যানযট লেগে থাকে।
You must be logged in to post a comment Login