তামাকমুক্ত নগরী নাগরিকের অধিকার

প্রকাশ: May 31, 2015
download

ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, সে কথা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখেনা। তবে ধূমপান স্বাস্থ্যের ঠিক কতটা ক্ষতি করে, তা হয়তো অনেকেরই জানা নেই৷ জার্মানির ক্যানসার গবেষণা কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, শুধুমাত্র ধূমপান করার কারণেই বছরে ১ লাখ ১০ হাজার থেকে ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষ মারা যায়৷ আর বছরে ৩,৩০০ জন মারা যায় ধূপায়ীদের কাছাকাছি থেকে সিগারেটের ধোঁয়া গ্রহণ করার কারণে।

একটি নিরাপদ বিশুদ্ধ বাতাসের নগরী আমাদের সবার প্রত্যাশা। আমরা চাই ঢাকা হবে একটি ধূমপানমুক্ত শহর। বিশ্ব স্বাস্থ সংস্থার (ডব্লিউএইচও) উদ্যোগে পৃথিবীর বেশ কুয়েকটি নগরী ধূমপানমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। যেমন, কাজাখাস্তানেত আলমাকি,ভারতের চণ্ডিগড় ও চেন্নাই, ফিলিপিনের দাভাও, যুক্তরাজ্যের লিভারপুল, সৌদ আরবের মক্কা ও মদিনা, মেক্সিকোর রাজধানী মেক্সিকো সিটি ইত্যাদি। এসব শহর যদি তামাকমুক্ত করা সম্ভব হয় তবে আমাদের প্রিয় ঢাকাকেও তামাক্মুক্ত করা সম্ভব।

new-york-city-smoking-banঢাকায় এখন অনেক ধূমপানমুক্ত দোকান এবং রেষ্টুরেন্ট রয়েছে কিন্তু এগুলোও সংখ্যায় ব্যাপক নয় , তাছাড়া আমাদের চিন্তধারা কেবল মাত্র শহর কেন্দ্রিক হওয়াটাও বাঞ্চনীয় নয়, আমাদের সপ্ন হওয়া উচিৎ তামাক নিয়ন্ত্রিত সুন্দর একটি বাংলাদেশ। অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মস্থলকে ধূমপানমুক্ত করতে চায়না কারণ তারা মনে করে তাদের প্রতিষ্ঠান কে ধূমপানমুক্ত করলে তারা ব্যাবসা হারাবে । কিন্তু অভিজ্ঞতা এবং বিভিন্ন দেশের গবেষনা থেকে দেখা যায় এই ধরনাটি সঠিক নয়। ব্যাবসায়ীরা যদি তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং তাদের কর্মস্থলকে ধূমপানমুক্ত রাখে তাহলে যারা ধূমপান পচ্ছন্দ করে না তারা অনায়াইে সেখানে যাতায়াত করবে। একটি কথা স্মরণ রাখা প্রয়োজন অধূমপায়ীর সংখ্যাই বেশী। তাছাড়া ধুমপানমুক্ত স্থানে অগ্নিকান্ডের সম্ভাবনাও কম থাকে।

সিগারেটের ধোঁয়ায় রয়েছে হাইড্রোজেন সায়ানাইট , এমোনিয়া , ন্যাপথলিন , কাবর্নমোনোক্সাইড , ডিডিটি , আর্সেনিক, মিথানল , নিকেটিন সহ প্রায় ৪০০০ তিকর রাসায়নিক দ্রব্য। যার অনেক উপাদান ক্যান্সার সৃষ্টির অন্যতম প্রধান কারণ। নিজেদের স্বাস্থ্য রার অধিকার আমাদের সকলেরই আছে আর এই অধিকার কে বাস্তবায়নের জন্য ধূমপানমুক্ত পরিবেশ তৈরী করা প্রয়োজন। হোটেল , রেস্টুরেন্ট , শপিংমল , যানবাহন এবং বিভিন্ন জনসমাগমস্থানকে ধূমপান মুক্ত ঘোষনা করে ধূমপানমুক্ত সাইন স্থাপন করা উচিত। তবে পাশপাশি ধূমপায়ীদের কথা বিবেচনা করে সুনির্দিষ্ট স্থানে ধূমপানের জন্য ব্যবস্থাও রাখা উচিত।

davao_lধূমপানমুক্ত সুস্থ্য একটি পরিবেশ আমাদের সকলেরই কাম্য, এজন্য প্রয়োজন সর্বস্তরের জনগণের সচেতনতামূলক সক্রিয় অংশ গ্রহণ। আমরা ইতিমধ্যেই জেনেছি , আর্ন্তজাতিক তামাক নিয়ন্ত্রণ চুক্তি এফটিসিটি এর স্বারকারী দেশ হিসাবে চুক্তির শর্ত অনুয়ায়ী বাংলাদেশের জন্য একটি আইন তৈরী করা এখন বাধ্যতামূলক এবং চলতি সংসদে আইনটি উত্থাপিতও হয়েছে। আশা করছি খূব শ্রীঘ্রই আমরা আমাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী একটি আইন পাব । এই আইনের সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে ধূমপানমুক্ত পরিবেশ সৃষ্টিতে তৎপর হবো।

You must be logged in to post a comment Login

মন্তব্য করুন